ঢাকা (১৯ অক্টোবর, ২০২০) : রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা এলাকা থেকে জাল টাকা তৈরির একটি কারখানার সন্ধানসহ বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও জাল টাকা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে ঢাকা মেট্রাপলিটন পুলিশের ডিবি গুলশান বিভাগ। এ সময় উপর্যুক্ত মালামালসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।
সহকারী পুলিশ কমিশনার মহিউদ্দীন আহমেদ আরো জানান, এই চক্রের মূলহোতা প্রথম পাইকারি বিক্রেতার নিকট প্রতি লাখ জাল টাকা বিক্রি করতো ১০-১২ হাজার টাকা। পাইকারি বিক্রেতা প্রথম খুচরা বিক্রেতার নিকট বিক্রি করতো ১৪-১৬ হাজার টাকা। প্রথম খুচরা বিক্রেতা দ্বিতীয় খুচরা বিক্রেতার নিকট বিক্রি করতো ২৫-৩০ হাজার টাকা। মাঠ পর্যায়ে দ্বিতীয় খুচরা বিক্রেতার হাত ধরে সেই টাকার মূল্য হয়ে যায় আসল টাকার সমান। মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বা দ্রবাদি ক্রয়ের মাধ্যমে এই জাল টাকা বাজারজাত করতো।
তিনি বলেন, চলমান মহামারী করোনাভাইরাসের সংকটের মধ্যেও তারা ব্যাপক প্রস্তুতির মাধ্যমে আবারও জাল টাকা তৈরিতে সক্রিয় হয়ে উঠেন। এই চক্রটি আসন্ন দূর্গা পূজাকে সামনে রেখে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় জাল টাকা বিস্তারের পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছিল।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা রুজু হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মোঃ হুমায়ন কবির খান (৪৫), মোঃ জামাল (৪২), সুখী আক্তার (৩০) ও তাসলিমা আক্তার (৩০)।
ডিবি গুলশান বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার মহিউদ্দীন আহমেদ জানান, রোববার (১৮ অক্টোবর) বিকাল ৪:১৫ টায় মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডের একটি বাড়ির দ্বিতীয় তলায় এই অভিযান চালায় সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম।
গ্রেপ্তারের সময় তাদের হেফাজত থেকে ৪৯ লক্ষ ৫০ হাজার বাংলাদেশী জাল টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সাথে জাল টাকা তৈরির কাজে ব্যবহৃত ১টি ল্যাপটপ, ২টি প্রিন্টার, ৫টি স্ক্রীন প্রিন্ট দেয়ার ফ্রেম, জাল নোট তৈরির জন্য ২৫০০ পিস সাদা কাগজ, ৯টি বিভিন্ন রংয়ের কালির কার্টিজ, সিকিউরিটি থ্রেট পেপারের রোল ১টি, প্লাস্টিকের কালির কৌটা ৩টি ও অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। অভিযানে উদ্ধারকৃত সরঞ্জাম দিয়ে আনুমানিক ৫ কোটি জাল টাকা তৈরি করা সম্ভব।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত হুমায়ন ও জামাল ২০০৮ সালের দিকে দুরুল হুদা নামের এক কারিগরের কাছে জাল টাকা তৈরির কৌশল রপ্ত করে। এরপর নিজেই জাল টাকা তৈরির কারখানা চালু করে হুমায়ন। গ্রেপ্তারকৃত জামাল শুরু থেকেই হুমায়নের তৈরিকৃত জাল টাকার ডিলার হিসেবে কাজ করে আসছে। গ্রেপ্তারকৃত দু’জন নারী তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করতো।